কুরআন তিলাওয়াত : ফযীলত ও আদব
কুরআন তিলাওয়াত : ফযীলত ও আদব
কুরআন তিলাওয়াতের ফযীলত
আজ আমরা এমন বিষয়ে আলোচনা করব যা আমাদের কল্যাণের গ্যারান্টি দেয়। যা আমাদেরকে রক্ষা করে যাবতীয় ফিতনা থেকে। এতে আছে অতীত-ভবিষ্যতের সংবাদ আর বর্তমানের জীবন-দিশা। এ কোনো হেলাখেলার বিষয় নয়; চূড়ান্ত ও অলঙ্ঘনীয় বিধান। ঔদ্ধত্য দেখিয়ে যে একে পরিহার করবে আল্লাহ তা‘আলা তাকে ধ্বংস করে দেবেন। যে এ ছাড়া অন্য কোথাও জীবনের পাথেয় খুঁজবে আল্লাহ তাকে পথভ্রষ্ট করবেন। এটি আল্লাহর সুদৃঢ় রজ্জু। আল্লাহ তা‘আলার প্রজ্ঞাময় আলোচনা। এটি সরল পথ। এটি থাকলে প্রবৃত্তি মানুষকে সুপথহারা করতে পারে না। এর শব্দোচ্চারণে কারও কষ্ট অনুভূত হয় না। আলিমরা কখনো এর তিলাওয়াত থেকে পরিতুষ্ট হন না। এটি পুরাতন হলেও বাতিল হয় না। এর বিস্ময় ও অলৌকিত্ব কখনো ফুরায় না। যে এ থেকে বলে সে সত্যবাদী। যে এর নির্দেশনা মতো চলে সে প্রতিদান প্রাপ্ত হয়। যে একে দিয়ে বিচার করে সে ইনসাফ করে। যে এর দিকে আহ্বান জানায় সে সুপথের দিকেই ডাকে।
হ্যা, আমি বলছি পবিত্র কুরআনের কথা। আল্লাহ তা‘আলার মহা প্রজ্ঞাময় বাণীর কথা। আমাদের কর্তব্য এ কুরআন শিক্ষা করা। নিয়মিত এর তিলাওয়াত করা। এ কুরআন নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করা। আমাদের দায়িত্ব নিজ সন্তানদের কুরআন শিক্ষা দেয়া এবং তাদেরকে এর তিলাওয়াত ও ভালোবাসায় অভ্যস্ত হিসেবে গড়ে তোলা। যাতে এর সাথে তাদের হৃদ্যিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং এর সঙ্গে তাদের মনোসংযোগ ঘটে। এতে করে তাদের চরিত্র হবে পবিত্র ও অপঙ্কিল। তাদের আত্মা ও হৃদয় হবে পরিশুদ্ধ। তারা হবে কুরআনের ধারক ও বাহক। কারণ, একটি শিশু যখন কুরআনের শিক্ষার মধ্য দিয়ে বড় হয়, সে জানতে পারে নামাজে কী পড়ছে। আর শিশুকালে কুরআনের হাফেয হওয়া বড় হয়ে হাফেয হওয়ার চেয়ে উত্তম। এতে করে তার স্মরণও থাকে ভালো। সে কখনো এ কুরআন ভুলে না। কারণ, শৈশবে কুরআন শিক্ষা করলে তা তার হৃদয়ে শিলালিপির মতো অঙ্কিত হয়ে যায়।
আমাদের উচিত, আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করা এবং কুরআনের প্রতি গুরুত্ব দেয়া। আল্লাহ তা‘আলা কালামে মাজিদে ইরশাদ করেন,
إِنَّ الَّذِينَ يَتْلُونَ كِتَابَ اللَّهِ وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَأَنْفَقُوا مِمَّا رَزَقْنَاهُمْ سِرًّا وَعَلَانِيَةً يَرْجُونَ تِجَارَةً لَنْ تَبُورَ (29) لِيُوَفِّيَهُمْ أُجُورَهُمْ وَيَزِيدَهُمْ مِنْ فَضْلِهِ إِنَّهُ غَفُورٌ شَكُورٌ (30)
‘নিশ্চয় যারা আল্লাহর কিতাব অধ্যয়ন করে, সালাত কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিযক দিয়েছেন তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে যা কখনো ধ্বংস হবে না। যাতে তিনি তাদেরকে তাদের পূর্ণ প্রতিফল দান করেন এবং নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে আরো বাড়িয়ে দেন। নিশ্চয় তিনি অতি মাশীল, মহাগুণগ্রাহী।’[1]

No comments:
Post a Comment